গানের সুরে কুরআন তেলাওয়াতের মাসআলা
- Post author:Maktabatul Abrar
- Post published:December 1, 2022
- Post category:কুরআন-হাদীস
- Post comments:0 Comments
- Reading time:1 mins read
লেখক : মাওলানা মুহাম্মাদ হেমায়েত উদ্দীন
بسم الله الرحمن الرحيم.
نحمده ونصلي على رسوله الكريم. أما بعد:
ইদানিং কিছু লোককে গানের সুরে কুরআন মাজীদ তেলাওয়াত করতে শোনা যাচ্ছে। কোথাও কোথাও হেফজখানার ছাত্রদেরকেও গানের সুরে তেলাওয়াত মাশক করানো হচ্ছে বলে আমাদের শ্রুতিগোচরে এসেছে। এরকম গানের সুরে কুরআন তেলাওয়াত করা সংগত কি না- এ প্রসঙ্গ নিয়েই এখনকার আলোচনা।
গানের সুরে তেলাওয়াত বলতে আমাদের উপমহাদেশে প্রচলিত গানের সুরে তেলাওয়াত হোক বা ইউরোপ আমেরিকায় প্রচলিত গানের সুরে তেলাওয়াত হোক বা আরব অনারব যেকোনো অঞ্চলে প্রচলিত গানের সুরে তেলাওয়াত হোক সবগুলোকেই বোঝানো হয়েছে। সবগুলোর হুকুমই অভিন্ন।
গানের সুরে কুরআন মাজীদ তেলাওয়াত করাকে পূর্বসূরী উলামায়ে কেরাম কুরআন হাদীছের আলোকে নিষিদ্ধ বলে আসছেন। হযরত ইবনুল কাইয়্যিম রহিমাহুল্লাহ ‘যাদুল মাআদ’ গ্রন্থে কীভাবে বৈধ সূরতে গেয়ে গেয়ে কুরআন পাঠ করা যায় তার বর্ণনা প্রদানের পর লিখেছেন-
الوجه الثاني: ما كان من ذلك صناعةً من الصنائع، وليس في الطبع السماحة به، بل لا يحصُل إلا بتكلُّف وتصنُّع وتمرُّن، كما يتعلم أصوات الغِناء بأنواع الألحان البسيطة، والمركبة على إيقاعات مخصوصة، وأوزانٍ مخترعة، لا تحصل إلا بالتعلُم والتكلف، فهذه هي التي كرهها السلفُ، وعابوها، وذمّوها، ومنعوا القراءةَ بها، وأنكروا على من قرأ بها.
অর্থাৎ, (গেয়ে গেয়ে পাঠ করার) দ্বিতীয় রূপ হচ্ছে যেটা একটা শিল্প। যা স্বভাব স্বতঃস্ফূর্ত নয়, বরং কৃত্রিম অনুশীলন ও কসরত করেই যা অর্জন করা হয়। যেমন সুর আরোপের সরল ও যৌগিক বিভিন্ন প্রকারের সুনির্দিষ্ট তাল ও উদ্ভাবিত মাত্রাযোগে গানের সুর শেখা হয়। এগুলো কৃত্রিম অনুশীলন ছাড়া অর্জিত হয় না। পূর্বসূরীগণ এটাকে অপছন্দ করেছেন, এটাকে দূষণীয় বলেছেন, এর নিন্দা জ্ঞাপন করেছেন। তারা এরকম সুরে কুরআন পাঠ করতে নিষেধ করেছেন এবং যারা এরকম সুরে পাঠ করে তাদের বিরোধিতা করেছেন।
তিনি আরও লিখেছেন-
وكلُّ من له علم بأحوال السلف، يعلم قطعاً أنهم بُرآء من القراءة بألحان الموسيقي المتكلفة، … ، وأنهم أتقى للّه من أن يقرؤوا بها، ويُسوّغوها.
অর্থাৎ, পূর্বসূরীদের অবস্থা সম্বন্ধে যারা অবগত তারা সকলেই নিশ্চিতভাবে জানেন যে, পূর্বসূরীগণ কৃত্রিমভাবে অর্জিত সংগীতের সুরে কুরআন পাঠ করা থেকে মুক্ত। এরকম সুরে কুরআন পাঠ করতে ও অনুমোদন দিতে তারা আল্লাহকে ভয় পেতেন।
রয়ে গেল গানের সুরে তেলাওয়াত করার বিভ্রান্তিটা এলো কোত্থেকে? যতদূর মনে হয় একটা হাদীছে উল্লেখিত একটা শব্দের অর্থ বুঝতে ভুল হওয়ায় কিছু লোক গানের সুরে তেলাওয়াতের আনুকূল্য বুঝে বসেছে। আগে হাদীছটি ও তার সঠিক অর্থ কি তা উল্লেখ করে নিচ্ছি, তারপর বিভ্রান্তি কোন শব্দ থেকে এসে থাকবে তা উল্লেখ করছি। হাদীছটি এই-
عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ أَنَّهُ سَمِعَ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يَقُولُ : مَا أَذِنَ اللَّهُ لِشَيْءٍ مَا أَذِنَ لِنَبِيٍّ حَسَنِ الصَّوْتِ يَتَغَنَّى بِالْقُرْآنِ ، يَجْهَرُ بِهِ . (رواه البخاري في صحيحه برقم ٥٠٢٤ ومسلم في صحيحه برقم ١٨٨٣ )